নড়াইলে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন চালিয়ে স্ত্রী জান্নাত আরা সেতুর মাথার চুল কেটে ন্যাড়া করে দিলো স্বামী সজিব মুস্তারিসহ তার পরিবারের অন্য সদস্যরা।

গভীররাতে স্বামীর বাড়ি থেকে পুলিশ গিয়ে তাকে উদ্ধার করে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করেছে। প্রাক্তন স্ত্রীকে ঘরে তুলে আনতেই এমন নির্যাতন বলে অভিযোগ উঠেছে। তাদের পরিবারে ১টি ছেলে ও ১টি মেয়ে রয়েছে। নড়াইল পৌর এলাকার দক্ষিণ নড়াইলে হোসেন ইমাম ওরফে তৈয়মুরের মেয়ে জান্নাত আরা সেতু।

গত শুক্রবার দিবাগত গভীর রাতে ঘটনাটি ঘটেছে শহরের দুর্গাপুরে। গভীর রাতে ঘটনাটি হওয়ায় বিষয়টি দেরিতে জানাজানি হয়।

জানা গেছে, প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদের পর শহরের দুর্গাপুর মহিলা কলেজ এলাকার নজরুল বিশ্বাসের ছেলে অট্রিয়া প্রবাসী সজিব মুস্তারি সাড়ে চার বছর আগে শহরের দক্ষিণ নড়াইলে হোসেইন ইমাম তৈমুরের মেয়ে জান্নাত আরা সেতুকে দ্বিতীয় স্ত্রী হিসেবে গ্রহণ করে। বিয়ের পরে কিছু দিন না যেতেই সেতু তার স্বামী সজিবের মাদকাসক্তি ও পূর্বের স্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগের বিষয় জানতে পারে।

এ নিয়ে প্রতিবাদ করতে গেলেই সেতুর উপর নির্যাতন শুরু হয়। এ অবস্থার মাঝে গত সাড়ে চার বছরের দাম্পত্য জীবনে সেতু দুই সন্তানের মা হলেও তার উপর নির্যাতন বন্ধ হয়নি। স্বামী সজিব দেশে আসলে তার অপকর্মের ব্যাপারে কথা বলতে গেলেই তাকে নির্মম নির্যাতন ভোগ করতে হয়।এরই ধারাবাহিকতায় শুক্রবার গভীর রাতে সজিব তার বাবা মার সহায়তায় সেতুকে বেদম মারপিটের এক পর্যায়ে হত্যার উদ্দেশ্যে জোর করে চেতনানাশক খাওয়ায়।

এ সময় সেতু জ্ঞান হারিয়ে ফেললে তার মাথার চুল, ভুরু কেটে দেয়া হয়। এ অবস্থায় গভীর রাতে জ্ঞান ফিরে পেয়ে কোন রকমে মোবাইফোনে স্বজনদের ঘটনা জানালে তার পুলিশে নিয়ে গিয়ে মেয়েকে উদ্ধার করে নড়াইল সদর হাসপাতালে ভর্তি করে।

নড়াইল সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সেতু বলেন, আমার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় নির্মম নির্যাতন করা হয়েছে। চুল এবং ভুরু কেটে দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি জোর করে এক সঙ্গে অনেকগুলি ঘুমের বড়ি খাইয়ে দেয়া হয়।

অভিযুক্ত সজিব মুস্তারির তার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ অস্বিকার করে তিনি জানান, তার মাথার চুল কখন কাটা হয়েছে আমি তার কিছুই জানি না। এ সব তার (স্ত্রী) বানানো কথা।

সদর থানার ওসি ইলিয়াস হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এ ঘটনায় ৩ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান চলছে।